ঢাকা, রবিবার ০৫, মে ২০২৪ ২৩:৩৫:৩২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
বজ্রপাতে বসতঘরে আগুন, ঘুমের মধ্যে মা-ছেলের মৃত্যু এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী আজ থেকে স্কুল কলেজ খোলা সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন সিলেট ৬০ টাকার নিচে মিলছে না সবজি, মাছ-মাংসে আগুন আরও ২ দিন দাবদাহের পূর্বাভাস

দেশ ছেড়ে বিদেশেও জনপ্রিয় হুমায়রার বালাচাও-আচার 

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৫৬ এএম, ২২ নভেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

ঘরে তৈরি আচার আর চিংড়ি শুটকির বালাচাও বানিয়ে দেশ ছেড়ে বিদেশেও জনপ্রিয়তা অর্জন করা যায়, তা প্রমাণ করেছেন চট্টগ্রামের নারী উদ্যোক্তা হুমায়রা বিনতে কবির। ছোট ভাইয়ের জন্য আচার বানাতে বানাতে হয়ে উঠেছেন সুস্বাদু আচারের শিল্পী। শাশুড়ির কাছ থেকেও শিখেছেন কীভাবে বানাতে হয় সুস্বাদু আচার। এর সাথে নিজের একাডেমিক শিক্ষা, মেধা, দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে হুমায়রা হয়ে উঠেছেন একজন সফল উদ্যোক্তা। মাত্র দুই বছরে তার ব্যতিক্রমী এই দুই পণ্যের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বের উন্নত দেশে। চট্টগ্রামের বড় সুপার স্টোরগুলোতেও বিক্রি হয় হুমায়রার ঘরে তৈরি বালাচাও ও আচার। হুমায়রা উদ্যোগের নাম ‘সিস্টার্স গোরমেট কিচেন’।

হুমায়রা বিনতে কবির। চট্টগ্রামের গার্মেন্টস সেক্টরে প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতির সন্তান। একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর স্ত্রী। মার্কেটিং মেজর সাবজেক্ট নিয়ে বিবিএম, এমবিএ সম্পন্ন করা হুমায়রা ই-কমার্স সেক্টরে নিজে উদ্যোক্তা হবেন সেটা কখনও চিন্তাই করেননি। কিন্তু ভালো আচার বানাতে পারার প্রশংসা আর পরিচিতজনদের উৎসাহে তার শুরুটা হয় ২০২০ সালে। 

 হুমায়রা জানান, ছোট ভাই সামিউল কবির খুব আচার খেতে পছন্দ করতেন। ভাইয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের পছন্দের আচার বানাতে গিয়েই আচারে নিজের দক্ষতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। ২০২০ সালের করোনাকালে ছোট ভাই ইমরুল কবিরের উৎসাহে এই দক্ষতার হাতকে বিস্তৃত করার উদ্যোগ নেন হুমায়রা। ভাই ইমরুল কবির এবং স্বজনদের উৎসাহ থেকেই ফেসবুকে ‘সিস্টার্স গোরমেট কিচেন’ নামের পেজ খুলে শুরু করেন ই-কমার্সে নিজের অগ্রযাত্রা। প্রথমে হাতেগোনা কিছু গ্রাহক থাকলেও যারাই একবার হুমায়রার আচারের স্বাদ গ্রহণ করেছেন তারা সেই আচারের অন্ধ ভক্ত হয়ে উঠেন। সময় গড়িয়েছে মাত্র দুই বছর, এই মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে হুমায়রার আচারের সুনাম এবং গ্রাহকের বিস্তৃতি। আচারের পাশাপাশি শাশুড়ির কাছ থেকে শেখা এবং স্বামী ফখরুল হাসানের উৎসাহে সিস্টার্স গোরমেট কিচেন’র প্রোডাক্ট লাইনে যুক্ত করেন চিংড়ি শুটকি ও কাচকি শুটকির বালাচাও ভর্তা। হুমায়রা হাতে তৈরি জাদুকরী স্বাদের কারণে এই দুটি পণ্যেই বাজিমাত করেছেন চট্টগ্রামের এই চৌকস মেধাবী তরুণী। ই-কমার্সে আসার পেছনে বাবা-মায়ের সমর্থন ছিল সবসময়।

প্রথমে চট্টগ্রাম। এরপর ঢাকা ও অন্যান্য জেলা আর বর্তমানে দেশ ছাড়িয়ে ইউরোপ, আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যেও তৈরি হয়েছে হুমায়রার আচার আর বালাচাও’র গ্রাহক। 

হুমায়রা জানান, তার নিজের তৈরি আচারের মধ্যে রয়েছে- আমের কাশ্মীরি আচার, আমের টক আচার, আমের টক ঝাল আচার, আমের ঝাল আচার, আমের মিষ্টি আচার, আম নাগা মরিচের আচার, নাগা মরিচের আচার, কাঁচা মরিচের আচার, টক আলু বোখরা আচার, দেশি রসুনের আচার, জলপাই আচার, জলপাই চাটনি, পাঁচমিশালী ফলের আচার, আমড়ার আচার, বড়ই মিষ্টি আচার, বড়ই তেঁতুলের আচার, তেঁতুলের আচার-চাটনি. চালতার আচার, আমসত্ত্ব। আর শুটকি ভর্তার মধ্যে রয়েছে- চিংড়ি শুটকির বালাচাও এবং কাচকি শুটকির বালাচাও।

দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বের যেসব দেশে হুমায়রার প্রোডাক্ট যায় তার মধ্যে রয়েছে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, কাতার এবং ভারত। এ ছাড়া দেশের বড় সুপার স্টোর স্বপ্ন, খুলশী মার্ট এবং শপিং ব্যাগ সুপার স্টোরে বিক্রি হয় হুমায়রার পণ্য। এসব সুপার শপে পাইকারি সরবরাহ করেন বালাচাও। হুমায়রা বলেন, আমার পণ্যে আমি সর্বদা বিশুদ্ধতা এবং স্বাস্থ্যমান সুনিশ্চিত করি। ফলে আমার পণ্যে গ্রাহকরা আস্থা রাখেন অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সাথে।

হুমায়রা বিনতে কবিরের বাবা হুমায়ুন কবির চৌধুরী সিআইপি চট্টগ্রামের সনেট টেক্সটাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। উল্লেখ্য, সনেট টেক্সটাইল আসন্ন বিশ্বকাপ ফুটবল আসরে ফিফার জন্য ৬ লাখ টিশার্ট তৈরি ও সফলভাবে সরবরাহ করে বিশ্বব্যাপী প্রশংসা অর্জন করেছে। 

হুমায়রা চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি এবং চট্টগ্রাম ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ (মার্কেটিং) সম্পন্ন করেন। মার্কেটিং মেজর নিয়ে এমবিএ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত হুমায়রা ২ পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জননী। তার স্বামীও চট্টগ্রামের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। নিজের তৈরি প্রোডাক্ট নিয়ে দেশ ও দেশের বাইরে আরও বিস্তৃত পরিসরে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন হুমায়রা।